2021 Best Bengali Inspirational Speech Examples For Success Life

কুবিচার বিষাক্ত জীবাণুর চেয়েও বেশী ঘাতক এবং ঘুণের চাইতেও অধিক অদৃশ্যে হয়। এই দুটি মানুষের মধ্যে একেবারে জেঁকে বসে এবং গুণ, কর্ম ও স্বভাব রূপী সমস্ত সম্পদকে একেবারে অন্তঃসারশন্য ও বিষাক্ত করে তোলে।

best-inspirational-speech-examples-bengali

হীন মনোবৃত্তি সম্পন্ন আদর্শহীন এবং লক্ষ্য বিহীন ব্যাক্তির কেবল জীবনের শবদেহ বয়ে বেড়ায়। তাদের মনোবাঞ্ছনা কখনোই সফল হতে পারেনা, কারণ উন্নতি করার জন্য প্রখর ব্যক্তিত্বের প্রয়োজন।

Inspirational Speech Ideas In Bengali

আমাদের আশা ও উৎসাহ সহকারে উজ্জ্বল ভবিষ্যতের কল্পনা করা উচিত। এখন থেকেই অসুবিধায় পড়ে যাওয়ার কথা ভাববে কেন? যদি ইচ্ছাশক্তি দৃঢ় ও মজবুত হয়, তাহলে নদীর মতো মানুষও তার সাফল্যের রাস্তা ঠিকই খুঁজে বার করে দিতে পারবে। তার ইচ্ছা শক্তি স্বয়ং তার পথ প্রদর্শন করে দেবে।

মানুষের জীবনের যাবতীয় সাফল্যের মূল তার ইচ্ছা শক্তির মধ্যে সীমিত থাকে। মানুষের সমস্ত শক্তির মধ্যে তার ইচ্ছা শক্তি হল সবচেয়ে প্রবল ও প্রধান। জাতির ইচ্ছা শক্তি দুর্বল তারা সাধন সম্পন্ন হওয়া সত্ত্বেও কোনো উল্লেখযোগ্য সাফল্য লাভ করতে পারে না। যাদের ইচ্ছাশক্তি অত্যন্ত দুর্বল তারা চলার পথে সামান্য বাধা বা সমস্যা দেখা মাত্রই সাহস হারিয়ে ফেলে।

ইচ্ছাশক্তিই হলো মানুষের বাস্তবিক শক্তি। ইচ্ছাশক্তিই হলো মানুষের জীবনের চিহ্ন কর্ম সম্পাদক এবং সঞ্চালক। যেখানে ইচ্ছা থাকে না সেখানে কর্মও সম্পাদিত হয় না, আবার যেখানে ইচ্ছা থাকে সেখানে কর্ম অনিবার্যরূপে থাকতে বাধ্য।

ইচ্ছার অনুপ্রেরণা দ্বারাই মানুষ কর্মে প্রবৃত্ত হয়। মানুষের মধ্যে যদি ইচ্ছার স্ফুরণ না ঘটে, যদি অনুপ্রেরণা না জাগে, তাহলে সে কেবল জড় পদার্থ হয়েই পড়ে থাকবে। আদিকাল থেকে আজ পর্যন্ত মানুষ যা কিছু উন্নতি বা বিকাশ করে চলেছে তার সবই ইচ্ছাশক্তিরই প্রতিফলন।

ইচ্ছাশক্তি দুর্বলতা হচ্ছে মানুষের সমগ্র জীবনের দুর্বলতা। যেখানে দুর্বল মানসিকতার লোকেরা বসবাস করে, সেখানে প্রায়শই ভয় ও আশঙ্কার পরিবেশ তৈরী হয়ে থাকে। তারা অন্যান্যদেরও দুর্বল এবং হতোদ্যম করে তোলে।

মহাত্মা গান্ধী স্বয়ং ইচ্ছাশক্তির জীবন্ত প্রতিমূর্তি ছিলেন। তার কাছে সম্বল বলতে কেবল এক প্রবল দৃঢ় এবং প্রখর ইচ্ছাশক্তি ছাড়া আর কিছুই ছিল না। কোন সেনাবাহিনী নয় কোন অস্ত্রশস্ত্র নয় কোন সাম্রাজ্য নয় তথাপি তিনি কেবল নিজের ইচ্ছা শক্তির উপর নির্ভর করে ইংরেজ সরকারের বিরোধিতা করতে সক্ষম হয়েছিলেন।

প্রবল ইচ্ছা শক্তি সম্পন্ন মানুষ যে কাজে কাজেই হাত দেয়, তাকে সম্পন্ন না করে ছাড়েন না। সাহস অবলম্বন করে সমস্ত বাধা বিপত্তি সাথে সংঘর্ষ করে এগিয়ে চলে। এছাড়া উন্নতি ও সফলতা লাভ করার অন্য কোন উপায় নেই। ইচ্ছাশক্তি হলো পৃথিবীর যাবতীয় সফলতার মূলমন্ত্র।

এরই সাহায্যে বিদ্যা, সম্পত্তি ও সাধন উপকরণ উপার্জন করা সম্ভব। এটি সেই সম্মোহন ও বশীকরণ মন্ত্র যাঁর শক্তির সাহায্যে একাকী পুরুষ কোটি কোটি জনগণকে নিজের অনুগামী করে নিতে পারে।

জীবনে উন্নতি ও সফলতার আশা করার আগে নিজের ইচ্ছাশক্তিকে প্রবল ও প্রখর করে তোলা ব্যক্তি কখনোই অসফল কিংবা নিরাশ হয় না। এর দ্বারা সদিচ্চুক ব্যক্তির আশা, উৎসাহ, সাহস এবং সক্রিয়তার অভাব হয় না।

যার মধ্যে এই সফলতা উপযুক্ত গুণাবলীর সমাবেশ থাকে অসফলতা কখনোই তার ধারে কাছে ঘেঁষতে পারে না। অসৎ ইচ্ছা তার বিষাক্ত প্রভাবের দ্বারা যেখানে মানুষের শক্তি নষ্ট করে দেয় সদিচ্ছা সেখানে নতুনভাবে স্ফূর্তি, উৎসাহ এবং অভিনব আশার সঞ্চার করে।

এক ইচ্ছা এক নিষ্ঠা এবং শক্তিসমূহের একতা সুনিশ্চিত রূপে মানুষকে তার অভীষ্ট লক্ষ্যে পৌঁছাতে সাহায্য করে। এতে কোন সন্দেহ নেই। এর জন্য প্রয়োজন হল গভীর, তীব্র, একনিষ্ঠ ও প্রচন্ড ইচ্ছাশক্তি।

মনে কোনো রকম অশুভ সংকল্প চিন্তাধারার উদয় হতে দেবেন না। অপরের অশুভ বিপরীতধর্মী চিন্তা ধারা গ্রহণ না করলে সেসব পুনরায় দাতার কাছে ফিরে যায়। এবং তারই ক্ষতি করে থাকে। সংকল্পের পবিত্রতা মানুষের সমগ্র জীবনকে পবিত্র ও তৃপ্ত করে তোলে।

আহার যতক্ষণ পর্যন্ত মুখে না তোলা হয় বা গিলে না ফেলা হয়, ততক্ষণ পর্যন্ত সেই আহার নিজে থেকে পেটে পৌছাতে পারেনা। উন্নতির পথে যখন সংকল্প নিয়ে এগিয়ে চলা হয় তখন সমস্ত প্রতিকূলতা অনুকূল হয়ে পড়ে এবং অন্ধকারেও আলোর প্রকাশ ঘটে। শুরুতে লক্ষ্যস্থল যত কঠিন মনে হতো, ধীরে ধীরে তা সরল হয়ে আসে।

জীবন গঠনের প্রত্যেকটি ক্ষেত্রে সংকল্প শক্তিকে বিশিষ্ট স্থান দেওয়া হয়েছে। সকল ইচ্ছা, সংকল্পের সীমারেখা স্পর্শ করতে পারে না। যাদের মধ্যে ইচ্ছাপূরণের শক্তি থাকে না তাদের নির্জীব বলে গণ্য করা হয়।

সমস্ত ইচ্ছা যখন বুদ্ধি বিচার এবং দৃঢ় চিন্তাভাবনার দাঁড়া পরিষ্কৃত হয়ে ওঠে, তখনই তা সংকল্পে রূপান্তরিত হয়। অভিষ্ঠ সিদ্ধির জন্য ইচ্ছার চাইতে সংকল্পের শক্তি অধিক হয়ে থাকে। সংকল্প সেই দুর্গের সমান জাব ভয়ংকর প্রতিকূল দুর্বল এবং বিষম পরিস্থিতিতেও অটুট থাকে এবং সফলতার দোরগোড়ায় পৌঁছে দিতে সক্ষম হয়।

উৎকৃষ্ট এবং নিকৃষ্ট জীবন পদ্ধতি প্রকৃতপক্ষে মানুষের বিচারধারার উপরে নির্ভর করে। কর্ম আমাদের বিচারের সক্রিয় রূপ। যে বিষয়ে মনে কোনো প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয় সেটি তখন নিজের পছন্দ বা দৃঢ় ইচ্ছার কারণে মনের মধ্যে পাকাপাকি স্থান করে নেয় এবং সেই অনুসারে বহির্জীবন নিয়ন্ত্রণ করে।

প্রত্যেক বিচারের একটি সুনির্দিষ্ট স্বরূপ থাকে, যা অন্য স্বজাতীয় প্রবাহের সাথে সংযুক্ত হয়ে আরোও বেশি শক্তিশালী হতে থাকে। এই ধরনের বিভিন্ন সংকল্প বিকল্প এই সূক্ষ্ম জগতে বিদ্যমান, কিন্তু তার সুফল মানুষ তখনই লাভ করতে পারে, যখন সে বিশেষ মনোযোগ সহকারে কোন ইচ্ছাকে পূরণ করার জন্য প্রবৃত্ত হয়।

এই ধরনের মস্তিষ্ক উক্ত স্বজাতীয় বিচার তরঙ্গ গুলিকে সূক্ষ্ম আকাশ থেকে তেমন ভাবে আকর্ষণ করে, যেমন ক্ষুধার্ত অজগর সাপ তার নিঃশ্বাসের সাহায্যে ছোট মাপের জীবজন্তু ও কীটপতঙ্গ কে নিজের দিকে আকর্ষণ করে নেয়।

স্বজাতীয় তত্ত্বগুলির এক অদৃশ্য শক্তি সক্রিয় হয়ে ওঠে এবং সফলতার বিভিন্ন পথ আপনা থেকেই উন্মুক্ত হতে শুরু হয়। তখন মনে হয় যেন কোন দৈব অনুগ্রহ সহযোগিতা করে চলেছে, কিন্তু সেটি আসলে সংকল্পেরই শক্তি, যা অনেক পুরুষদের মস্তিষ্ক থেকে কল্পনা ও বিচার-বিবেচনা খুঁজে বার করে এবং বিচারের ব্যক্তিরা সেগুলির মধ্যে থেকে নিজের পরিস্থিতির অনুরূপ উপায় বেছে নেয়। এর ফলে সফলতা প্রাপ্তিতে একটুও দেরী হয়না।

ধরে নাও, তুমি সংকল্প করেছ এবছর ভালো নম্বর নিয়ে পরীক্ষায় পাস করবে। এজন্য তোমাকে প্রাতঃকালে উঠতেই হবে এবং মনোযোগ সহকারে পড়তেও হবে। পড়াশোনায় অবহেলা করলে তোমার ইচ্ছাও অপূর্ণ থেকে যাবে। দৃঢ় সংকল্পে মানুষের বুদ্ধি-শুদ্ধি এবং শরীর ক্রিয়াশীল রাখা দরকার।

আমাদের মন যদি শক্তিশালী হয় এবং কাজ করার আগ্রহ থাকে তাহলে কোন অশুভ প্রভাব কিংবা অবরোধ আমাদের সাফল্যের পথে নিজেদের প্রভাব বিস্তার করতে পারে না। নিজের মনকে যদি ঝড়ের আঘাতে অত্যন্ত প্রখর বর্ষা শীতে অনড়, অটল, কঠোর পাষানের মত গড়ে তোলা যায়, তাহলে পরিস্থিতি এবং সাংসারিক বাধা-বিপত্তি তোমার কোন প্রকার ক্ষতি করতে পারবেনা।

মনকে অবরুদ্ধ করে রাখাই যথেষ্ট নয়। তাকে এমনই দিক নির্দেশ করা উচিত যেখানে সে প্রচুর পরিমাণে রহস্যের সন্ধান পায় এবং তার প্রতি রুচি বৃদ্ধি করতে পারে। মনকে বিপদ থেকে ফেরানোর জন্য বারবার নিষেধ করা হচ্ছে একই রকমের প্রয়াস। মনের গতিবিধি পরিবর্তন করার জন্য তাকে কোন আদর্শ কাজে নিযুক্ত করা এবং কোন আকর্ষণীয় স্থানে বিচরণ করার সুযোগ করে দেওয়া দরকার।

একথা সত্যি যে সংকল্পের অভাবে শক্তির কোনো গুরুত্ব এবং মূল্য থাকে না। তেমনি একথাটিও সত্যি যে শক্তির অভাবে সংকল্পও পূর্ণ হতে পারে না। শুধুই সংকল্প করে যায়, এমন উদ্যমহীন ব্যক্তি কে সেই অলস ব্যাক্তির সাথে তুলনা করা চলে যে চোখের সামনে পড়ে থাকা আম কে হাত বাড়িয়ে মুখে তোলার চেষ্টা টুকুও করতে পারে না। অথচ সে ইচ্ছামত আমের স্বাদ গ্রহণ করার আকাঙ্ক্ষা পোষণ করে।

সংকল্পের সাথে শক্তিকে সংযুক্ত করা, এক ধরনের কৌশল এবং এতে খুব কম লোকই সফল হতে পারে। তার কারণ হল পরিশ্রম ও প্রয়াসের প্রতি নিরপেক্ষ হয়ে থাকা। প্রকৃতপক্ষে কেবল সেই সব ইচ্ছাই পূরণ হতে পারে, যার সাথে যথাযথ চেষ্টাও যুক্ত থাকে। এখানে শক্তির অর্থ হল উদ্দেশ্যের প্রতি দৃঢ় নিষ্ঠা তাকে পূর্ণ করার জন্য সমস্ত প্রকারের বাধা-বিপত্তির সাথে লড়াই করার মতো মনোবল সাহস।

এছাড়া সংকল্প কখনো শক্তিতে পরিণত হতে পারেনা। তার জন্য যতই জল্পনা-কল্পনা করা হোক না কেন কাজের কিছুই হয় না।

উপযুক্ত এবং উচ্চস্তরের উপকরণ জোটাবার জন্য মানুষ প্রতীক্ষায় থাকে এবং কোন মহত্বপূর্ণ কাজ শুরু করার আগে ভাবতে আরম্ভ করে যে, উপযুক্ত প্রকরণের ব্যবস্থা হয়ে গেলেই কাজ শুরু করা হবে। সমোচিত ব্যবস্থার জন্য প্রতীক্ষারত থাকা, এই সম্ভাবনার আভাস দেয় যে, সেই কাজটি কখনোই আরম্ভ হতে পারে না।

প্রতীক্ষায় থাকার পরিবর্তে সেই কাজটি কে যথাশীঘ্র আরম্ভ করে দেওয়া দরকার। স্বল্প সুযোগ-সুবিধার সত্বেও প্রবল সাহসের মাধ্যমে বড় বড় গুরুত্বপূর্ণ কাজ সম্পন্ন করা যেতে পারে। এ বিষয়ে প্রচুর প্রমাণ ও উদাহরণ ইতিহাসের পাতায় ভরা রয়েছে।

যে সময় সমুদ্রের পরিধি এশিয়ার পার্শ্ববর্তী এলাকায় 1000 মাইল পর্যন্ত মেনে নেওয়া হতো এবং সমুদ্রকে সীমাহীন বলে মনে করা হতো, সেই সময়ে 18 বছরের বালক কলম্বাসের কল্পনা আমেরিকা পর্যন্ত চলে গিয়েছিল।

কিন্তু সে একাকী করবে? একজন অন্তত সহায়ক তো তার চাই! পর্তুগিজরা মিথ্যা আশ্বাস দিয়ে তার নকশা চুরি করে নিয়েছিল। এই ধরনের অসহায় অবস্থায় কলম্বাস তার বিচক্ষণতার পরিচয় দিয়ে আমেরিকা খুঁজে বার করেছিল এবং সেখানে পৌছানোর জন্য দৃঢ় সংকল্প হয়েছিল।

তার এই সিদ্ধান্তে একের পর এক বিপদের সম্ভাবনা আছে জেনেও তার মহৎ সংকল্প একটুও দমিত হয়নি। সেই মহা দ্বীপে যাওয়া আসার রাস্তা যা এর আগে অবধি অজ্ঞাত ছিল, তাকে সে ঠিক আবিষ্কার করে নেয়। তার এই ধরনের সাহসিকতা ও বিচক্ষণ আবিষ্কার স্মরণীয় হয়ে আছে।