Unique Bengali Motivational Speech For Students In Bangla Language

ছাত্রাবস্থাকে জীবনের সেই স্বর্ণিম অধ্যায় বলা চলে , যেখানে উদ্যম ও আকাঙ্খায় ভরা মানব ব্যক্তিত্ব সব সময় কিছু না কিছু গ্রহণ করার জন্য উন্মুখ হয়ে থাকে। এই সময়ে নতুন নতুন কল্পনার অঙ্কুরোদ্গম হয় , নতুন আশার কলি এবং নতুন উপলব্ধির ফুল ফুটতে শুরু করে।

দিবাস্বপ্নে নিমগ্ন অথচ শক্তি এবং সম্ভাবনায় পরিপূর্ণ এই জীবনের প্রতি কেবল অভিভাবকদেরই নয় বরং সারা পরিবার এবং সমাজেরও মনোযোগ কেন্দ্রিত থাকে। কিছু শেখার , জানার এবং কিছু হয়ে ওঠার নিরন্তর প্রয়াস এই সময়েই সার্থক ও ফলপ্রসূ হয়ে থাকে।

Motivational Speech for Students in bengali

প্রত্যেক ছাত্রের অনুভব করা উচিত যে , সে এমন এক সময়কে অতিক্রম করে চলেছে , যা তার ভাগ্য এবং ভবিষ্যত গড়ে তোলার কাজে নির্ণায়কের ভূমিকা পালন করবে।

এই সময় যদি শ্রেষ্ঠ বিচার , সম্ভাবনা এবং সদ্ প্রবৃত্তির অভ্যাস করা যায় তাহলে তার প্রভাব সারা জীবন বহাল থাকে এবং সুখ শান্তির সম্ভাবনাও সার্থক হয়।

Best powerful Motivational speech for Students in Bengali

ছাত্রাবস্থায় বন্ধুবান্ধবের আকর্ষণ চরম সীমায় থাকে। ভাল বন্ধু পাওয়া গেলে উন্নতি এবং প্রসন্নতা বৃদ্ধির কাজে সহায়ক হয়। প্রত্যিক বুদ্ধিমান ছাত্রের কর্তব্য হল কারো সাথে বন্ধুত্ব করার আগে যেন হাজার বার চিন্তা ভাবনা করে নেয়। কেবল সচ্চরিত্র বন্ধু , শ্রেষ্ঠ বই এবং সর্ব শক্তিমান পরমাত্মারই সঙ্গ করে।

সদ্ বিচারের নোটবুক তৈরী করে। যখনই কোন সদবাক্য পড়বে বা শুনবে , সেগুলি যেন নোট করে নেয়। সময়ে সময়ে সেগুলি নিয়ে যেন চিন্তন মনন করে। আদর্শ ব্যক্তিদের , মহাপুরুষদের কথা ভাবে এবং তাঁদের চারিত্রিক বিষয়ে চিন্তন ও মনন করে।

স্বাস্থ্যরক্ষার জন্য এই সময়টিই হল সর্বাধিক উপযুক্ত। প্রাকৃতিক নিয়ম পালন , আহার – বিহার , শয়ন ও জাগরণ ‘ ইত্যাদি বিষয়ে যদি সঠিক মনোযোগ দেওয়া যায় তাহলে শরীর এতটাই মজবুত হয়ে উঠবে যা সারা জীবন সহযোগিতা করে যাবে। বেশীর ভাগ অকুশল ছাত্ররাই অনুশাসনহীন এবং উচ্ছৃঙ্খল হয়ে থাকে৷ তাদের পড়াশোনায় কোন মনোযোগ থাকে না।

ভাল ছাত্রের লক্ষণ না থাকার দরুণ তাদের মনে গুরুজনদের প্রতি কোন শ্রদ্ধা থাকে না। তারা কোন শ্রেণী , শ্রেয় অথবা প্রশংসার যোগ্য হয় না। ভবিষ্যত জীবনের দায়িত্ব পালনের বিষয়ে তারা অনভিজ্ঞ হয়ে থাকে এবং তাদের মধ্যে জীবনের কোন বিশেষ লক্ষণ দেখা যায় না।

এই ধরণের মানসিক শূন্যতার ফলে সৃষ্টি হওয়া হীনমন্যতাকে চেপে রাখবার জন্য অকুশল ও অযোগ্য ছাত্ররা উচ্ছৃঙ্খলতাকেই তাদের সম্মানের বিষয় বস্তু মনে করে।

যে সমস্ত বিদ্যার্থীদের কেবল পড়াশোনার দিকেই মনোযোগ থাকে , তারা কখনই পড়াশোনা ছাড়া অনর্থক সময় নষ্ট করে না। আত্মনির্ভরতা , অপরের সহায়তা করা , ধর্মের সদুপযোগ , সময়ের সুনিয়োজন এবং সদ্ব্যবহার , মানসিক ভারসাম্য , সসাহিত্যেরস্বাধ্যায়করা , কঠিন পরিশ্রম , দৃঢ়সংকল্প , স্বচ্ছতা , সুব্যবস্থা , সুসঙ্গতি , বিধেয়াত্মক চিন্তাধারা , সুস্থ জীবন , শালীনতা , সজ্জনতা , প্রসন্নতা , শিষ্ট এবং বিনম্র আচরণ ইত্যাদি সদ্গুণগুলি যুবাবস্থাকে অলংকৃত করে তোলে।

নব যুবকরা যদি আর্থোপার্জনের অভ্যাস শুরু করে, তাহলে তাদের মধ্যে এমনই বিশেষত্ব ফুটে উঠতে শুরু করবে , যার দ্বারা তাদের ভবিষ্যত জীবন স্বর্ণিম এবং সমুজ্জ্বল হয়ে উঠতে পারে।

ছাত্রছাত্রীদের লক্ষ্য নির্ধারণ

জীবনে সাফল্য লাভ করার জন্য প্রত্যেকরই নিজস্ব একটা লক্ষ্য এবং উদ্দেশ্য থাকা দরকার। সর্ব প্রথমে নিজের জীবনের লক্ষ্য এবং উদ্দেশ্য নির্ধারণ করতে হবে। জীবনে কি করতে চাও আর কি হতে চাও , সেটা ঠিক কর। এরপর সেই লক্ষ্যপ্রাপ্তির জন্য দৃঢ় সংকল্পিত হয়ে লেগে পড়।

মনে এই বিশ্বাসকে দৃঢ় করে তোল যে , সাফল্যে আমার জন্মগত অধিকার রয়েছে। নিরন্তর যেন লক্ষ্যপ্রাপ্তির কথাটিই স্মরণ থাকে। যুবাবস্থার এই স্বর্ণিম অধ্যায়কে বিফলে যেতে দিও না। নিজের লক্ষ্যকে সামাজিক উদ্দেশ্যের সাথে সংযুক্ত করে নাও , যাতে তোমার এই লক্ষ্য সমাজে সকলের জন্য কল্যাণকারক হতে পারে।

মনে রেখো , লক্ষ্য যতই দূরবর্তী হোক না কেন , সেই অবধি তোমাকে পৌঁছাতেই হবে। সময় পেরিয়ে গেলে অনুতাপ ছাড়া আর কিছুই করার থাকবে না ।

যখন মানুষের চিন্তা ভাবনার শরীরের এবং সামর্থের সম্পূর্ণ শক্তি একই লক্ষ্যে কেন্দ্রিভূত হয়ে যায়, তখন সাফল্য প্রাপ্তির বিষয়ে কোন সন্দেহ থাকে না। নিজের অন্তর্নিহিত শক্তিকে জানার চেষ্টা কর। নিজের লক্ষ্যকে প্রতিদ্বন্দ্বিতার রূপে স্বীকার করে নাও। সংকল্প কর , আমি অতি অবশ্যই আপন লক্ষ্য প্রাপ্ত করব , আমার সেই সামর্থ্য আছে।

স্মরণ রেখো, তোমার মনোবাঞ্ছা ও উদ্দেশ্য যাই হোক না কেন, তা কেবল তোমার নিজস্ব শক্তির দ্বারাই পূর্ণ হতে পারে। তার জন্য এদিক সেদিক খোঁজ করে কিছুই পাবে না। অপরের উপর ভরসা করে থাকলে কেবল হতাশই হতে হবে।

অতএব নিজের উদ্দেশ্য সিদ্ধির জন্য নিজের পায়ে দাঁড়াতে চেষ্টা কর। প্রত্যেক ব্যক্তির মধ্যে এমন এক শক্তিকেন্দ্র মজুত রয়েছে , যা তাকে তার ইচ্ছানুসার উচ্চ স্থানে পৌঁছে দিতে পারে। প্রত্যেক ব্যক্তির মধ্যে আত্মার অনস্ত এবং অপার শক্তি বিদ্যমান।

নিজের শক্তি প্রবাহের সমুচিত প্রয়োগ করাই হল প্রকৃত সাফল্য। জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে শক্তি সঞ্চয় এবং সামর্থ্যই মানবিক উত্থানের জন্য আবশ্যক হয়ে থাকে। নিজের উদ্দেশ্যকে যদি সফল করতে চাও তাহলে ওঠো , নিজের শক্তিবৃদ্ধি কর , নিষ্ঠা , কর্মদক্ষতা এবং আত্মবিশ্বাস জাগিয়ে তোল।

সব সময় এই অনুভব করবে যে , আমি আমার লক্ষ্যপ্রাপ্তির জন্য দৃঢ় প্রতিজ্ঞ এবং এই পথে যতই বাধা বিঘ্ন আসুক না কেন , আমি তাদের প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার জন্য প্রস্তুত। পৃথিবীর কোন শক্তিই আমাকে লক্ষ্যপ্রাপ্তির পথে প্রতিরোধ করতে পারবে না।

এই প্রকার দৃঢ় সংকল্পের সাথে এগিয়ে গেলে দেখবে , সাফল্য তোমার প্রতি পদক্ষেপে সাথে ছায়ার মত লেগে থাকবে। তুমি নিজেই যখন নিজেকে সাহায্য করতে শুরু করবে তখন স্বয়ং ঈশ্বরও তোমাকে সাহায্য করার জন্য ছুটে আসবেন। এই পথ প্রতিটি ব্যক্তির জন্য খোলা আছে। যারা কারো প্রতীক্ষা না করে স্বয়ং সাফল্যে সংলগ্ন হয় , তারা নিজেদের সংকল্প শক্তির সাহায্যে নিশ্চিত রূপে তাদের লক্ষ্য প্রাপ্ত করে থাকে।

সময়ের সঠিক ব্যবহার

মানুষের কাছে ঈশ্বর প্রদত্ত যে পুঁজিটি আছে তার নাম হল সময়। সময়ই হল পৃথিবীর সবচেয়ে মূল্যবান সম্পদ, যার বিনিময়ে পৃথিবীর যে কোন সাফল্য লাভ করা সম্ভব।যে ব্যক্তি সময়ের সদ্ব্যবহার করে সে কখনও অসফল হয় না।

এমনিতে বলা হয় যে পরিশ্রমের মাধ্যমেই সাফল্য লাভ করা যায়, কিন্তু পরিশ্রমের অর্থও তো সেই সময়েরই সদ্ব্যবহার ছাড়া অন্য কিছু নয়। অতএব সময় পালন করাই ঐশ্বরিক নিয়মগুলির মধ্যে সবচেয়ে মহত্ত্বপূর্ণ।

প্রকৃত সময়ের উপাসক কখনই একটা মুহূর্তকেও নষ্ট হতে দেয় না, নিজেদের সময়ের প্রত্যেকটি মুহূর্তকে অমূল্য রত্নের সমান মনে করে তার সদ্ব্যবহার করে এবং সফল ও শ্রেয়াধিকারী মহামানবে পরিণত হয়। সময়ের অভাবের কথা কখনই বলা উচিৎ নয়। পৃথিবীতে এমন একটিও মানুষ নেই যাকে বিধাতা চব্বিশ ঘন্টার চেয়ে এক মুহূর্ত কম সময় প্রদান করেছেন। যাকে তোমরা সময়ের অভাব বল , তা কিন্তু আদৌ সময়ের অভাব নয় বরং সময়ের অপব্যবহার।

এই কারণেই সময় অনুপযুক্ত কাজে অতিবাহিত হয়ে যায় যার ফলে উপযুক্ত কাজের জন্য একটুও সময় অবশিষ্ট থাকে না। যারা সময়ের সদ্ব্যবহার করতে জানে না তারা সঠিক ভাবে জীবন যাপন করতে জানে না, জীবনের দিনগুলিকে অযথা নষ্ট করে এবং কোন ভাবে জীবন কাটিয়ে যায়। কে কত বছর জীবিত থেকেছে, সেটি আদৌ তার জীবনের পরিমাপ নয় বরং জীবনে সময়ের সদ্ব্যবহার কতটা করা হয়েছে, সেটিই হল তার জীবনের প্রকৃত পরিমাপ।

সবার জীবনেই এক পরিবর্তনকারী সময় আসে, কিন্তু বেশীর ভাগ মানুষই সে বিষয়ে অনভিজ্ঞ থাকে। এই কারণে প্রত্যেক বুদ্ধিমান ব্যক্তি জীবনের প্রতিটি ক্ষণ বহুমূল্য ভেবে তাকে ব্যর্থ হতে দেয় না।

অলস ও অকর্মণ্য ব্যক্তি জীবনের বেশীর ভাগ সময় কোন উপযুক্ত সুযোগের অপেক্ষা করেই কাটিয়ে দেয় অথচ তাদের ভাগ্যে কখনও উপযুক্ত সুযোগ আসে না। সময়ের সামান্যতম প্রতিটি মুহূর্তর মূল্য এবং গুরুত্ব সম্বন্ধে প্রত্যেক ব্যক্তির সচেতন থাকা উচিত।

যাদের জীবনে কিছু করবার ইচ্ছা আছে, তারা যেন নিজেদের কোন কাজ ভুল করেও আগামী দিনের জন্য রেখে না দেয়। আজকের কাজ যেন আজই সম্পন্ন করে। জীবনে সাফল্য লাভের জন্য লক্ষ্য ও পরিশ্রমের প্রয়োজন অনিবার্য, এবং সময়ের সামঞ্জস্য রেখে চলা তার চেয়েও অনেক বেশী প্রয়োজনীয়।

পরিশ্রমকে সময়ের সাথে সংযুক্ত করা গেলে তা সম্পত্তিতে পরিণত হয় এবং পরিশ্রমের সাথে সাথে সময়ের সদ্ব্যবহার করা হলে সেটি তখন সম্পদের রূপে সম্পন্নতা এবং সাফল্য প্রদান করে থাকে।

যারা নিজেদের দিনচর্যা তৈরী করে নেয় এবং নিয়মিত রূপে সেগুলি পালন করে চলার বিষয়ে সংকল্পিত থাকে , তারাই একমাত্র সময়ের প্রকৃত সুফল অর্জন করে।

কোন কাজ নির্দিষ্ট সময়ে করা হলে, অন্তর্মনে সেই কাজটিকে সেই সময়ে করার অভ্যাস গড়ে ওঠে এবং ইচ্ছাও জাগে৷ নির্দিষ্ট সময়ে কোন কাজ করার বিষয়টি অভ্যাসে পরিণত হয়ে গেলে, সেই সময়ে সেই কাজটি করার ইচ্ছা জেগে উঠবে , তাতে মন বসানোও সহজ হবে এবং কাজটিও সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করা যাবে।

দূরদর্শী চিন্তা ভাবনা এবং ব্যবহারিক দৃষ্টিভঙ্গীর মাধ্যমে নিয়মানুবর্তিতা এবং সুব্যবস্থিত দিনচর্যা পালন করে যে কোন ব্যক্তিই সময়ের সদ্ব্যবহার করতে পারে এবং নিজের অভীষ্ট লক্ষ্যে আশানুরূপ উন্নতি করতে পারে।

জীবনের অর্থ হল সময়। যারা জীবনকে ভালবাসে , তারা যেন সময়ের এক মুহূর্তও অযথা নষ্ট না করে। মানব জীবনে উন্নতির পথ অত্যস্ত সংকীর্ণ কিন্তু এতে মস্ত বড় বাধা হল – নিয়মানুবর্তিতার অভাব। যারা জীবনচর্যাকে সুনিয়োজিত করতে পারে , তারা একের পর এক সিঁড়ি অতিক্রম করে সেখানে পৌঁছে যেতে সমর্থ হয়, যেখানে গিয়ে সাথীদের সাথে তুলনা করলে প্রতীত হয় যে, কোন দেবতা কিংবা দানবের সহায়তা ছাড়া এ কাজ সম্ভব নয়।

বাস্তবে উন্নতিশীল ব্যক্তির দ্বারা নিয়মানুবর্তিতা অবলম্বন করার ফলেই এ কাজ সম্ভব পর হয়ে থাকে। তারা নিজের সময়, শ্রম এবং চিন্তা ভাবনাকে এক দিশা বিশেষের প্রতি সংকল্প পূর্বক নিয়োজিত করতে সক্ষম হয়েছে।

এর বিপরীতে যারা বড় ধরণের পরিকল্পনা করা সত্ত্বেও সেই পথে দৃঢ় নিশ্চিতরূপে চলা তো দূরের কথা , এমন কি নিজেদের দিনচর্যা তৈরী করারও কোন প্রয়োজন অনুভব করে না এবং বহুমূল্য সময়কে যেমন তেমন ভাবে আলস্য ও প্রমাদে নষ্ট করে থাকে , তাদের কেবল দুর্ভাগ্যের অনুতাপই সহ্য করতে হয়।