এখানে আপনি পাবেন উদাহরন সহ সেরা কিছু bangla chanakya niti, ukti, bani, quotes, চাণক্যের নীতি কথা, বানী ও উপদেশ;
Contents List
2021 Chanakya Niti In Bengali
চানক্য বা বিষ্ণুগুপ্ত কে ইতিহাসের অন্যতম চালক, চতুর, বুদ্ধিমান, ও মহান ব্যাক্তি, বলে মনে করা হয়, চানক্য ছিলেন প্রাচীন ভারতের দার্শনিক, অর্থনীতিবিদ ও রাজ-উপদেষ্টা, তিনি রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিষয়ক অর্থশাস্ত্র নামন গ্রন্থটি রচনা করেন,
তিনি ছিলেন চন্দ্রগুপ্ত মৌর্যের রাজ উপদেষ্টা; অর্থনীতি ও রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিষয়ে চাণক্য বা কৌটিল্য ছিলেন প্রাচীন ভারতের একজন দিকপাল,
চানক্য তার বুদ্ধি এবং রাজনৈতিক বিবেক ও বল দ্বারা নন্দ রাজবংশের সাম্রাজ্যকে পরাস্ত্র করে চন্দ্রগুপ্ত মৌর্যেকে অখণ্ড ভারতের রাজ আসনে বসিয়ে ছিলেন, চানক্য দ্বারা তৈরি নীতি এতটাই কার্যকরী ছিল যে, কোনো মানুষ তার সাফল্যে পৌঁছাতে আজও তার বাণী ও নীতি গুলোকে অনুসরণ করে থাকেন,
1. নিজের লক্ষ্যের কথা গোপন রাখা
চানক্য নীতি মতে নিজের লক্ষ্যে ও সংকল্পের ব্যাপারে সব কথা কখনো কাউকে বলা উচিৎ নয়, কারণ চানক্য মনে করতেন কোনো কিছুতে হইহুল্লোড় না করে সবসময় ঠাণ্ডা মস্তিষ্কে ভালো করে বুঝেশুনে নিজের কাজ এগিয়ে নিয়ে যেতে হয়,
আসলে হয়কি যখন আমরা কোনো ভালো কাজ করি বা করবো বলে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করি, তখন যদি অন্য কাউকে সেই কাজের কথা বলা হয়, তাহলে ঐ মানুষ গুলোর কাছ থেকে আমাদের দুই ধরনের প্রতিক্রিয়া মেলে,
প্রথমত সেই মানুষটি যদি আপনার অনুগত হয় তাহলে সে আপনকে অনেক বেশি বাহবা দেবে, এবং আপনার প্রসংশা করতে থাকবে, আর বেশি প্রশংসা বা বাহবা মানুষকে অনেক বেশি খুশি করে তোলে, আর মনের মধ্যে ভাবনা আসে এইতো এতো ভালো রেসপন্স মিলছে, আর বেশি কিছু করার প্রয়োজন নেই, এভাবে নিজের লক্ষ্যে পৌঁছানোর চেষ্টা ও ইচ্ছা ধীরে ধীরে কম আসতে থাকে,
দ্বিতীয়ত কিছু এমন মানুষ থাকে যারা আমাদের লক্ষ্যের বা কর্ম সম্পর্কিত ইচ্ছের কথা শোনা মাত্রই নেগেটিভ কথা বলা শুরু করে দিতে থাকে, বলে এটা করলে এই সমস্যা সেই সমস্যা প্রভৃতি উদাহরণ দিতে থাকে, আর সেই সব উদাহরণ বাস্তবে আপনার সাথে যে ঘটবে তার কোনো নিশ্চয়তা নেই,
আর এসব শুনে আমাদের মনে নেতিবাচক প্রভাব পরেতে থাকে, যা ঐ কাজটি সম্পনো করতে ও নিজের লক্ষ্যে পৌঁছাতে বাঁধা প্রদান করে,
সুতরাং কেউ আপনার কাজে প্রাংসা করুক বা নেতিবাচক কোনো কথা বলুক দুই ভাবেই মনে ও ভাবনায় খারাপ প্রভাব পড়ে, তাই চানক্য নীতিতে নিজের সাফল্য ও লক্ষ্যের কথা গোপন রাখার চেষ্টা করতে বলেছেন,
2. শিক্ষা হলো সবচেয়ে বড় বন্ধু
আচার্য্য চানক্য তার গ্রন্থে বলেছেন এডুকেশন বা শিক্ষাই হলো মানুষের সব থেকে বড় হাতিয়ার, একজন সুশিক্ষিত ব্যক্তির সব স্থানেই সম্মান ও গুরুত্ব অপরিসীম, আর শিক্ষার কাছে দৈহিক সুন্দর্য্য ও আকর্ষণ হার মেনে যায়,
চানক্য মনে করেন মানুষের আসল সুন্দর্য্য ও শক্তি তার শরীরে নয় হলো তার মনে ও ভাবনায় থাকে, একজন মানুষ শারীরিক দিক থেকে দুর্বল বা দেখতে খারাপ হতে পারে, আবার এটাও হতে পরে তিনি অনেক বেশি ধনী ব্যক্তি নন, কিন্তু তার কাছে যদি শিক্ষা থাকে তাহলে সে যেকোনো জায়গায় সম্মান ও গুরুত্ব দুই পাবার যোগ্যতা রাখে,
মানুষের সৌন্দর্য, টাকা, আর দেহের শক্তি সময়ের সাথে সাথে শেষ হয়ে যেতে থাকে, কিন্তু তার শিক্ষা মরার আগের দিন পর্যন্ত তার সাথে থাকে, আর শিক্ষার আরেকটি গুণ হলো শিক্ষা কাউকে দিলে বা দান করলে কোনো দিন শেষ হওয়া, উপরন্তু নিজের মধ্যে শিক্ষার মান আরও বাড়তে থাকে, তাই কোনো সফলতা অর্জন করার জন্য শিক্ষা অর্জন করা খুব জরুরি,
3. বিন্দু বিন্দু জলে হয় সিন্ধু,
যেমন করে বিন্দু বিন্দু জল জমে জমে সমুদ্র তৈরি করে ঠিক তেমনি মানুষের ক্ষেত্রেও জ্ঞান ও অর্থ সঞ্চয় করা প্রয়োজন, চানক্য এই বিষয়ে বলেছেন যেমন করে আমরা কোনো নতুন জিনিস একটু একটু করে শিখতে শিখতে একসময় সে বিষয়ে আমরা অভিজ্ঞ হয়ে পরি, ঠিক একই ভাবে যদি সঠিক ভাবে টাকাকে কিছু কিছু করা জমা করা যায়, তাহলে এক সময় অনেক বেশি মাত্রায় টাকার পরিমাণ পাওয়া সম্ভব হয়,
আর এই বিষয়টিকে বর্তমান বৈজ্ঞানিক ভাষায় ‘দী কম্পাউন্ড ইফেক্ট’ বলে অভিহিত করা হয়, উদাহরণ স্বরূপ বলা যায় জ্ঞান অর্জন করার জন্য যদি কেউ একটি বই পড়ে তাহলে তার জ্ঞান বৃদ্ধি পায়, আবার ঐ ব্যাক্তি যখন অনেক বেশি বই অনুশীলন করবে তাহলে তার জ্ঞান ভান্ডার অনেক বেশি বৃদ্ধি পাবে,
তাই জীবনে কিছু করতে হলে জ্ঞান আর ধণ দুই সঞ্চয় করার অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে,
4. অপরের ভুল থেকে শেখো
চানক্যের মতানুযায়ী একজন মানুষ তখনি সঠিক ভাবে সফল হতে পারবে যখন সে অপর কোনো ব্যাক্তির ভুল থেকে শিক্ষা নিতে সক্ষম হবে, যদি আমরা দ্বিতীয় কোনো ব্যাক্তির ভুল থেকে শিখি ঐ একি ভুল করা থেকে নিজেকে রক্ষা করতে পারা যাবে, এর ফলে সময় ব্যয় ও ক্ষিতি দুটো থেকেই বাঁচা সম্ভব হবে,
আমাদের জীবনে এতো সময় ও সুবিধা নেই যেখানে বার বার ভুল করে নিজের ভুল থেকে নিজে শিখতে পারি, এর পরিবর্তে আমাদের আসে পাশের সকলের প্রতি নজর রাখতে হবে, এর এটা দেখতে হবে যে কে কি ভুল করছে, তার ভুলের ফলে তার কি ক্ষতি হচ্ছে,
আর তার ভুলের গুলোর থেকে জ্ঞান নিতে হবে, আর সেই ভুল ও খারাপ গুলো থেকে দূরে সরিয়ে রাখতে হবে,
5. আরামপ্রদ বা আয়েস জীবিন থেকে বেরিয়ে আসা
জীবনে কিছু শিখতে ও সফলতা পেতে হলে তাহলে তাকে প্রথমে তার আয়েশি জীবন থেকে বেরিয়ে আসতে হবে, নিজেকে অনেক বেশি কর্মঠ করে তুলতে হবে, পরিশ্রম ছাড়া জীবনে কোনো কিছু পাওয়া সম্ভব নয়, কিছু পাওয়ার করার ইচ্ছে গুলো শুধু কল্পনার মইধ্যে আবদ্ধ থেকে যাবে,
চানক্য এটা বলেন যে মানুষের সকল ইচ্ছা তখনই পূর্ণ হয় যখন সে মনের সম্পূর্ণ শক্তি ও দেহের প্রিশ্রমকে কাজে লাগাতে পারবে,
পৃথিবীতে এমন অনেক লোক আছে যারা কিছু করতে বা সফলতা পেতে আকাঙ্খিত হয়ে থাকে, কিন্তু এর জন্য তারা তার শ্রমশীলতাকে কাজে লগায় না, কথায় আছে কিছু পেতে হলে কিছু ত্যাগ করতে হয়, আর তাই জীবনে কিছু পেতে হলে নিজের আয়েশি জীবনাবস্থা থেকে বেরিয়ে আসতে হবে,
6. সব সময় বিশেষজ্ঞ এর পরামর্শ নিন
শৃষ্ঠাচার কোনো সামাজিক ব্যাক্তির সাথে, আর সঠিক কথা বলা বিদ্যান আর জ্ঞানীর থেকে, এবং মিথ্যা বলা মিথ্যুকের কাছ থেকে শিখতে হয়, এগুলো বলার মানে হলো মানুষ যে বিষয়ে শিখতে চায় সেই বিষয়ে পারদর্শী কোনো বিশেষজ্ঞের কাছ থেকেই শেখ উচিৎ,
অনেক সময় এমনটা হয় যে, বেশির ভগই মানুষই এটাই ঠিক করতে পারেনা, তার সমস্যা সমাধানের জন্য কার থেকে সঠিক সিদ্ধান্ত নেওয়া দরকার, আর সে তার সব কথা বিভিন্ন জনকে বলে ফেলেতে থাকে, বিভিন্ন জন নানান মতামত মতামত দিতে থাকে এর ফলে তার সমস্যা দুর হওয়ার পরিবর্তে সে কর কথা কাজে লাগবে তাই নিয়ে বিভ্রান্তির মধ্যে পরে যায় এবং সমস্যা গুলো আরো বেড়ে যেতে থাকে,
কারণ আপনার যদি শরীরের ওজন কমাতে চান, তাহলে তার থেকেই পরামর্শ নিতে হবে যে সঠিক ভাবে শরীরের ওজন কমাতে পেরেছে, নিশ্চয় সেই ব্যাক্তির বুদ্ধি বা পরামর্শ ততোটা লাভ জনক হবে না, যে শুধু ওজন কমানোর কথা বলেন,
7. নিজের মনের কথা কাউকে না বলা,
চানক্য নীতি বলে মনের গোপন কথা, দুর্বলতা, ও সামর্থ্য কখনো কাউকে বলা উচিৎ নয়, কোনো মানুষকে যদি আপনার এই বিষয় গুলো বলে ফেলেন, তাহলে সে আপনাকে তার বসবর্তী বানিয়ে নেয়ার চেষ্টা করবে, বা আপনাকে ব্যবহার করতে থাকবে,
কারণ মানুষ কখনো বুঝতে পারেনা কোন মানুষ কখন পাল্টে যায়, আজ যে অনেক আপন কাল যে সে একই থাকবে তার কোনো নিশ্চিয়তা নেই, তাই কারোর কাছ প্রতারিত হওয়ার থেকে নিজেকে দূরে রাখতে নিজের মনের কথা নিজের মধ্যেই রাখা শ্রেয়,
যখন নিজেই নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করার ক্ষমতা মানুষ অর্জন করে ফেলতে সক্ষম হবে, তখন আর ল কেউ তার ব্যহরার করতে পারবে না, বা সে কারোর থেকে প্রতারিত করতে পারবে না,