How To Boost Self Confidence In Bengali

আত্মবিশ্বাস এমন একটি বিষয় যার মাধ্যমে পৃথিবীর সকল প্রকার কঠিন থেকে কঠিনতম কাজকে সম্পন্ন করে তোলা সম্ভব। যদি নিজের প্রতি সঠিক আস্থা ও বিশ্বাস অর্জন করা যায় তাহলে কোনো কিছুই তোয়াক্কা না করে নিজের মনের ইচ্ছা পূরণ করে নেওয়া যেতে পারে।

boost-self-confidence-in-bengali

জীবনে সাফল্য লাভ করার যতগুলি সাধনের কথা বলা হয়েছে, তার মধ্যে বিদ্বানরা পাঁচটি সাধনকে প্রধান স্থান দিয়েছেন। যে ব্যক্তি তার নিজের জীবনে এই পাঁচটি সাধনের সমাবেশ করে নিতে পারে, তার পক্ষে যে কোন পরিস্থিতিতে নিজের মনোবাঞ্ছিত সাফল্যকে বরণ করে নেওয়া সম্ভব।

Boost self-confidence in Bengali language

এই ৫টি সাধনা সম্পর্কে নিম্নে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো।

1. পরিশ্রম
যে মানুষ নিজের শরীরের সার পরিশ্রমরূপী তপস্যায় খরচ করে, নিজের শক্তি এবং ক্ষমতার সমুচিত উপযোগ করে, সে আলোর দিশালাভ করে ধন্য হয়ে যায়।
সক্রিয়তাই জীবন আর নিষ্ক্রিয়তাই মৃত্যু। পরিশ্রম করা থেকে বিরত হয়ে আলস্য ও প্রমাদে পড়ে থাকা মানুষকে জীবিত বলা যায় না।

2. আত্মবিশ্বাস ও আত্মত্যাগ
আত্মবিশ্বাস এবং আত্মনির্ভরতায় অক্ষম ব্যক্তিকে কেউ সহায়তা কিংবা সহযোগিতা করে না। নিয়ম হল, মানুষ একমাত্র তাকেই সহায়তা করে, যে নিজের সহায়তা নিজেই করতে প্রস্তুত থাকে এবং যার হৃদয় আত্মবিশ্বাসের ভাবনায় পরিপূর্ণ থাকে। কিছু পেতে গেলে কিছু দিতে হয়, যে দেয় সে পায়।

যদি কেউ ভাবে, সে জগতের কাছে শুধু পেয়েই যাবে কিন্তু কিছুই দেবে না, তাহলে তেমন স্বার্থপর ও সংকীর্ণ মনোবৃত্তির মানুষটির পক্ষে এই আদান প্রদানের ভিত্তিতে সঞ্চালিত পৃথিবীতে এক পাও এগোনো সম্ভব নয়। সুতরাং সাফল্যলাভ করা অথবা তার সম্ভাবনাগুলিকে সুনিশ্চিত করে তোলার জন্য, যে কোন আবশ্যক ত্যাগ স্বীকার করতে প্রস্তুত থাকা চাই।

3. স্নেহ ও সহানুভূতি
সাফল্য কিংবা তার জন্য করা প্রচেষ্টায় যদি স্নেহ ও সহানুভূতির সমাবেশ না করা হয়, তাহলে তা হয় অসফলতায় বদলে যাবে নতুবা তার প্রাপ্তিই হবে না। যে ব্যক্তি ক্রুর, কঠোর ও সংবেদনশীলতাহীন, তার এই দোষগুলিই তার চলার পথে কাঁটার মত ছড়িয়ে পড়ে।

উন্নতি এবং বিকাসের পথে চলতে যারা ইচ্ছুক তাদের স্নেহ এবং সহানুভূতি নিয়ে চলতে হয়, যাতে তার প্রতিদানে তারাও যেন স্নেহ ও সহানুভূতি লাভ করে এবং তাদের চলার পথ প্রশস্ত হয়ে ওঠে।

4. সাহস এবং নিয়মানুবর্তিতা
ভীরুদের মধ্যে এক পাও এগিয়ে চলার সাহস থাকে না। সে প্রতি পদক্ষেপে বিপত্তি এবং কঠিন পরিস্থিতির আশঙ্কা করে। সাফল্যের পথে অসাফল্যের ভয় থাকা স্বাভাবিক। ভীরু ব্যক্তিরা এই অজ্ঞাত অথবা অসম্ভাব্য অসাফল্যের ভয়ে নিজেদের অভিযান শুরুই করবে না । যে শ্রেয় পথের সূত্রপাত আদৌ করা হয়না , তার কোন পরিণামও সম্ভব নয়।

5. প্রসন্নতা এবং মানসিক ভারসাম্য
শরীর যাত্রার জন্য জীবনের যতটা প্রয়োজন, সাফল্য লাভের জন্য প্রসন্নতারও ততটাই প্রয়োজন থাকে। অপ্রসন্ন ব্যক্তিদের এক প্রকারের নির্জীব বলা চলে। অপ্রসন্ন অবস্থায় মানুষের মানসিক ভারসাম্য থাকা অসম্ভব এবং ভারসাম্যহীনতা নিশ্চিত রূপে অসাফল্যের সৃষ্টি করে।

যারা সাফল্যের আকাঙ্গা রাখে, তাদের উচিত হল শ্রেয় লাভের জন্য সাফল্যের পাঁচটি সাধনের অভ্যাস ও বিকাস করে নিজের গন্তব্য পথে এগিয়ে চলা, যার ফলস্বরূপ তারা অতি অবশ্যই সাফল্য লাভ করতে পারবে।

Character is the greatest asset of a man

চরিত্র হল মানুষের সবচেয়ে বড় সম্পদ। সদ্ বিচার এবং সৎকর্মের সংমিশ্রণকেই চরিত্র বলা হয়। যে নিজের ইচ্ছাগুলিকে নিয়ন্ত্রিত করে, তাদের সৎকর্মের রূপদান করে তাকেই চরিত্রবান বলা যায়। সুসংযত ইচ্ছাশক্তির দ্বারা অনুপ্রাণিত সদাচারের নামই চরিত্র। অন্যান্য সমস্ত সম্পত্তিই অস্থায়ী, কিন্তু চারিত্রিক সম্পত্তিই মানব জীবনের একমাত্র স্থায়ী সম্পদ।

মানুষের চরিত্রই হল তার জীবনের স্থায়ী সাফল্যের আধার। এ ছাড়া যেমন তেমন ভাবে সাফল্য লাভ করলেও তা কখনই স্থায়ী হয় না।

সেবা, দয়া, পরোপকার, উদারতা, ত্যাগ, শিষ্টাচার, সদব্যবহার ইত্যাদি যদি চরিত্রের বাহ্য অঙ্গ হয়, তাহলে সদভাব, উৎকৃষ্ট চিত্তন, নিয়মানুবর্তিতা, সুশৃঙ্খল জীবন এবং শাস্ত গম্ভীর মনোভূমি ইত্যাদি হল চরিত্রের পরোক্ষ অঙ্গ।

তোমার বিচারধারা, ইচ্ছা, আকাঙ্গা এবং আচরণ যেমন হবে তারই অনুরূপ তোমার চরিত্র গড়ে উঠবে এবং তোমার চরিত্র যেমন হবে, তোমার জগতটাও তারই অনুরূপ তৈরী হয়ে যাবে। উত্তম চরিত্র জীবনকে সঠিক দিশায় পরিচালিত করে কিন্তু চরিত্রহীনতা মানুষকে পথভ্রষ্ট করে যে কোন সময় বিনাশের গর্তে ঠেলে দিতে পারে।

চরিত্রই হল মানব জীবনের ভিত। এই ভিত যদি জীর্ণ, জর্জর ও দুর্বল হয়, তাহলে জীবনের দেবালয় বিশ্বাসপূর্বক টিকে থাকতে পারে না। যার চরিত্র অধঃপতিত, যে সমাজে বিশ্বাসের যোগ্য নয়, তাকে প্রতি পদে পদে অসহযোগ, অসহানুভূতির জ্বালা সহ্য করতেই হবে।

নিকৃষ্টতম মানুষরাও ওপর থেকে মানুক বা না মানুক, তারা কিন্তু মনে মনে সচ্চরিত্র ব্যক্তির প্রতি এক ধরণের সম্মানের মনোভাবই পোষণ করে এবং তাকে ভয়ও পায়। প্রাচীন কালে আমাদের ভারতবর্ষ বিশ্বগুরু হবার গৌরব অর্জন করতে পেরেছিল, এর কারণও তার সচ্চরিত্রতা এবং মহান নৈতিক মূল্যরক্ষা করার বিষয়ে সামর্থ্যই প্রধান ছিল।

চরিত্র নির্মাণ কার্যে সাহিত্যের যথেষ্ট অবদান থাকে। মহাপুরুষদের জীবনী পড়ার পর নিজের মনেও তাঁদেরই মত হয়ে ওঠার ইচ্ছা জাগে। বিচার ধারাকে দৃঢ়তা ও শক্তি প্রদান করার যোগ্য সাহিত্য মানুষের আত্মনির্মাণের কাজে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করে। এর ফলে আন্তরিক বিশেষত্ব জাগ্রত হয়।

ভাল পুস্তকের মাধ্যমে প্রাপ্ত অনুপ্রেরণা প্রকৃত বন্ধুর কাজ করে। এতে জীবনের সঠিক দিশার জ্ঞান হয়। এর বিপরীতে অশ্লীল সাহিত্য মানুষের অধঃপতনের কারণ হয়ে দাঁড়ায়। চরিত্র মানুষের সবচাইতে বড় শক্তি ও সম্পদ।

জগতের অনন্ত সম্পদের অধিপতি হওয়া সত্ত্বেও যদি কেউ চরিত্রহীন হয়ে থাকে, তাহলে তাকে সব দিক দিয়ে বিপন্নই মনে করা হবে।

আপাততঃ দেশের যুবাবৃন্দের উপর এই দায়িত্ব এসে পড়েছে যে, দেশের চরিত্রকে ঊর্ধ্বগামী করে তোলার জন্য তারা যেন স্বয়ং নিজের চরিত্রকেও উজ্জ্বল রাখে এবং অপরের চরিত্রও রক্ষা করে।

The pursuit of a sure Profitable life

জীবন সাধনার অর্থ হল, নিজের অগঠিত ব্যক্তিত্বকে সুগঠিত রূপদান করা এবং তাকে সব দিক দিয়ে উপযুক্ত করে তোলা। প্রত্যেক ব্যক্তির মধ্যে মহান হয়ে ওঠার সম্ভাবনা বীজরূপে বিদ্যমান থাকে। প্রশিক্ষণ ও অভ্যাসের দ্বারা তাদের বিকসিত করে তোলা যেতে পার। জীবন সাধনায় সাধককে চতুর্বিধ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে হয়।

আত্মচিন্তন:
আত্মচিন্তনের অর্থ হল নিজের সমীক্ষা করা। নিজের দোষ ত্রুটি গুলিকে খুঁজে বার করার জন্য সচেষ্ট হওয়া। প্রত্যেক ব্যক্তির স্বয়ং নিজেরই সূক্ষ্ম আত্মনিরীক্ষণ করা উচিত এবং নিজের ত্রুটি গুলিকে খুঁজে বার করা উচিত। নিজের দোষগুলিকে নিরপেক্ষ ভাবে দেখা এবং তাদের স্বীকার করে নেওয়া উচিত।

আত্মসংশোধন:
দুষ্প্রবৃত্তি পরিত্যাগের জন্য, কুসংস্কার নষ্ট করার জন্য এবং নিজের দোষ ত্রুটি দূর করার জন্য আত্মসংশোধনের পদ্ধতি অবলম্বন করা দরকার। এর জন্য প্রথমে ছোট খাটো বদভ্যাস গুলির সাথে লড়াই শুরু করা উচিত।

তাদের পরাস্ত করা সম্ভব হলে, অধিক পুরানো এবং অপেক্ষাকৃত বড় ধরণের দুষ্প্রবৃত্তির সাথে লড়াই করবার উপযুক্ত মনোবলের সঞ্চার হবে।

আত্মনির্মাণ:
জীবন সাধনার তৃতীয় সোপান আত্মনির্মাণ। এর অর্থ হল নিজের ব্যক্তিত্বকে উৎকৃষ্ট এবং সু সংস্কৃত করে তোলার শৃঙ্খলাবদ্ধ প্রচেষ্টা। দুৰ্গুণগুলিকে নিরস্ত করার পর সদ্গুণগুলিকেও প্রতিস্থাপন করা চাই।

দুৰ্গুণগুলিকে নিরস্ত করার পর সদ্গুণগুলিএকত্রিত করাও একান্ত আবশ্যক। সদ্ বিচার এবং সৎকর্মের সমগ্র জীবন পদ্ধতি গ্রহণ করা হলেই ব্যক্তিত্ব সুসংস্কৃত হয়ে ওঠা সম্ভব হয়।

আত্মবিকাস:
জীবন সাধনার অস্তিম সোপান হল আত্মবিকাস৷ অর্থাৎ আত্মীয়তা বিকসিত করে তোলা । সাধারণতঃ মানুষের চিন্তা ভাবনা এবং ক্রিয়া কলাপ তার নিজের শরীর, মন ও নিজের পরিবারের সুখ সুবিধার পরিধিতেই সীমিত থাকে।

স্মরণ রাখা উচিত যে মানবোচিত ব্যক্তিত্ব ঈশ্বরের সর্বশ্রেষ্ঠ কলাকৃতি। এর জন্য স্রষ্টার যেটুকু পরিশ্রম লেগেছে, তার অন্তরালে এই উদ্দেশ্যই রয়েছে যে, মানুষ তাঁর সহকারীর মত সৃষ্টির সুব্যবস্থায় সংলগ্ন থেকে সহযোগিতা করে যাবে।

এই অবস্থায় পৌঁছাবার পর ব্যক্তি সীমিত না থেকে অসীম হয়ে ওঠে এবং তার কার্যক্ষেত্রও ব্যাপক পরিধিতে বিস্তৃত হয়ে সৎপ্রবৃত্তির সম্যক রূপে বৃদ্ধিকরণের কাজে সংলগ্ন হয়ে পড়ে। এমন ব্যক্তিরা নিজেদের চাহিদাগুলি কম করে, জীবন ধারণের ন্যূনতম প্রয়োজন পূরণ করার পর অবশিষ্ট ক্ষমতা এবং সম্পদকে সদ্ প্রয়োজনে নিয়োজিত করে থাকে।

জীবন সাধনার এই চারটি সোপানের সম্মিলিত প্রয়োগ মানুষকে উৎকৃষ্ট ব্যক্তিত্ব এবং উজ্জ্বল চরিত্র প্রদান করে। জীবন সাধনা হল বাস্তবিক কল্পবৃক্ষ। তার ছায়ায় এসে মানুষ জীবনের মহানতম উপলব্ধি প্রাপ্ত করতে সক্ষম হয়।

Not to be feared in times of danger

মানুষের ইচ্ছা থাকুক অথবা না থাকুক, জীবনে পরিবর্তনশীল পরিস্থিতি ও বিপদ দেখা দেবেই। আজ যদি উত্থান হয় তবে কাল পতনও অবশ্যম্ভাবী। উত্থিতদের পতন এবং পতিতদের উত্থান হয়ে থাকে।

অধিকাংশ ব্যক্তি সুখ, সুবিধা, সম্পন্নতা, প্রাপ্তি, উন্নতি ইত্যাদিতে প্রসন্ন ও সুখী হয়, কিন্তু দুঃখ, সমস্যা, ক্ষতি ইত্যাদি দেখা দিলে দুঃখিত এবং উদ্বিগ্ন হয়ে পড়ে। এ হল মানুষের একাঙ্গী দৃষ্টিভঙ্গীর পরিণাম।

কঠিন পরিস্থিতিগুলি মানুষের জীবনের এক সহজ ও স্বাভাবিক অঙ্গ। যাদের মেনে নিয়ে মানুষ নিজের জন্য উপযোগী করে তুলতে পারে।

যে কঠিন পরিস্থিতিতে কিছু মানুষ উদ্বিগ্ন হয়ে কান্নাকাটি করতে শুরু করে, মানসিক ক্লেশ অনুভব করে থাকে, সেই কঠিন পরিস্থিতিতেই অপর ব্যক্তি নবপ্রেরণা, নব উৎসাহ লাভ করে সাফল্যকে বরণ করে নেয়।

মানসিকদিক দিয়ে সবল ব্যক্তি বড়ধরণের কঠিন পরিস্থিতিকেও স্বীকার করে নিয়ে এগিয়ে চলে কিন্তু দুর্বল মানসিকতার ব্যক্তিরা সামান্য বিপত্তিতেই নিশ্চেষ্ট হয়ে পড়ে।

বাস্তবে কঠিন পরিস্থিতি, দুঃখ, হয়রানি ইত্যাদি হল মানব জীবনের কষ্টিপাথরের সমান, যার মাধ্যমে মানুষের ব্যক্তিত্বের রূপ উজ্জ্বল হয়ে ওঠে। মানুষের জীবনে কঠিন পরিস্থিতির এক মহত্ত্বপূর্ণ স্থান রয়েছে। এদের উন্মুক্ত হৃদয়ে। স্বীকার করে মানসিক বিকাস প্রাপ্ত করা সম্ভব।

কঠিন পরিস্থিতিকে খেলোয়াড় সুলভ মনোভাব সহকারে স্বীকার করে নিলে, ইচ্ছাশক্তি প্রবল হয়ে ওঠে এবং বড় মাপের কাজ সম্পন্ন করার মত ক্ষমতা লাভ করা যায়। কঠিন পরিস্থিতিতে মানুষের আন্তরিক শক্তিগুলি একত্রিত এবং সংগঠিত রূপে কাজ করে থাকে।
জীবনের যে কোন সাধনা কঠিন পরিস্থিতিকে অতিক্রম করার পরই পূর্ণ হয়।

অতএব মানুষ যদি চায় তাহলে সে তার কঠিন পরিস্থিতিগুলিকে বরদান করে নিতে পারে কিংবা অভিশাপেও পরিবর্তন করতে পারে। প্রত্যেক পরিস্থিতিতে আমাদের নিজেদের মনকে সুষম, শান্ত এবং স্থির রাখা উচিত।

নিজেদের চাইতে অধিক সম্পন্ন এবং সুখী ব্যক্তিদের দেখে ঈর্ষান্বিত এবং মনঃক্ষুণ্ণ হবার পরিবর্তে, নিজেদের চাইতে অধিক দুঃখী, শক্তিহীন এবং অভাবগ্রস্ত কোটি কোটি মানুষদের কথা ভেবে সন্তুষ্ট থাকা উচিত যে, ঈশ্বর আমাদের প্রতি যথেষ্ট অনুগ্রহ করেছেন।

মানুষের ধৈর্যের পরীক্ষা সুখের চাইতে দুঃখেই বেশী হয়ে থাকে। মহাপুরুষদের বৈশিষ্ট্য হল, তাঁরা দুঃখের সময়ে আমাদের মত অধীর হন না। তাঁদের প্রারব্ধ কর্মের ভোগ মনে করে প্রসন্নচিত্তে সহ্য করে যান।

কষ্ট এবং কঠিন পরিস্থিতিকে দুঃখজনক মনে করে যারা এদের হাত থেকে পালাতে চায়, সেগুলি তখন তাদের জীবনে দুঃখ রূপেই লেগে থাকে আর যে বুদ্ধিমান এদের সুখের হেতু মনে করে স্বাগত জানায়, সেগুলি তাদের জীবনে দেবদূতের মত বরদায়ক সিদ্ধ হয়ে থাকে।

আগুনে উত্তপ্ত করা হলে সোনার রং যেমন উজ্জ্বল হয়ে ওঠে, তেমনই সদ্‌ব্যক্তির জীবন কঠিন পরিস্থিতির আগুনে পরিপক্ক হয়ে থাকে। এর মাধ্যমে মানুষ সত্য অসত্যের, আপন পরের যথার্থ জ্ঞান লাভ করে। প্রকৃত বন্ধু এবং আত্মীয় স্বজনের পরিচয় একমাত্র কঠিন পরিস্থিতিতেই পাওয়া যায়।

পরিবর্তনকে ভয় করা এবং সংঘর্ষ করার ক্ষেত্রে দ্বিধাগ্রস্ত হয়ে পড়া মানুষের এক মস্ত বড় কাপুরুষতার লক্ষণ। মানুষ যতদিন জীবিত থাকবে, ততদিন তাকে পরিবর্তনপূর্ণ উত্থান পতন এবং তৈরী ও বিনষ্ট হবার অনুকূল ও প্রতিকূল পরিস্থিতির মুখোমুখী হতেই হবে।

সুখ দুঃখ, লাভ ক্ষতি, সফলতা অসফলতা, সুবিধা অসুবিধার মধ্যে দিয়ে চলতেই হবে। এ সব নিশ্চিত রূপে দেখা দেবে এবং মানুষকে এদের সাথে লড়াই করতেই হবে।

সংকট এই জগতের এক স্বাভাবিক ধর্ম। তারা আসে এবং সর্বদা ” আসতেই থাকবে। এতে ভয়ভীত হয়ো না এবং পালাবার চেষ্টাও কোর না, উল্টে নিজের সম্পূর্ণ আত্মবল, সাহস এবং শৌর্যের সাথে এদের মোকাবিলা করে বিজয়ী হও এবং জীবনে উল্লেখযোগ্য সাফল্য লাভ কর।

Determined to build our goal

আমাদের যুগ নির্মাণ এর জন্য কিছু সংকল্প

  • আমরা ঈশ্বরকে সর্বব্যাপী, ন্যায়কারী রূেপে স্বীকার করে তার অনুশাসনকে নিজেদের জীবনে ধারণ করব।
  • শরীরকে ভগবানের মন্দির ভেবে নিয়ে আত্মসংযম এবং নিয়মানুবর্তিতার দ্বারা আরোগ্য রক্ষা করব।
  • মনকেকুবিচার এবং দুর্জবনার কবল থেকে বাঁচিয়ে রাখার জন্য নিয়মিত স্বাধ্যায় এবং সৎসঙ্গের ব্যবস্থা করব।
  • ইন্দ্রিয় সংযম, অর্থ সংযম, সময় সংযম এবং বিচার সংযমের সতত অভ্যাস করব।
  • নিজেকে সমাজের এক অভিন্ন অঙ্গ মনে করব এবং সকলের কল্যাণে নিজের কল্যাণ মনে করব।
  • মর্যাদা পালন করব, নিষিদ্ধ আচরণ থেকে দূরে থাকব, নাগরিক কৰ্ত্তব্য পালন করব এবং সমাজনিষ্ঠ হয়ে থাকব।
  • বুদ্ধিমত্তা, বিশ্বস্ততা, দায়িত্বশীলতা এবং সাহসিকতাকে জীবনের এক অবিচ্ছিন্ন অঙ্গ মনে করব।
  • চতুর্দিকে মধুরতা, স্বচ্ছতা, সরলতা এবং সজ্জনতার পরিবেশ গড়ে তুলব।
  • অনীতির দ্বারা প্রাপ্ত সাফল্যের পরিবর্তে নীতির পথে অর্জিত অসাফল্যকে শিরোধার্য করে নেব।
  • মানুষের মূল্যাঙ্কনের কষ্টিপাথর রূপে তার সাফল্য, যোগ্যতা এবং বিভূতিকে নয় বরং তার সদ্ বিচার এবং সৎকর্মকেই প্রাধান্য দেব।
  • অন্যের সাথে তেমন ব্যবহার করব না, যা আমার নিজেরই পছন্দ নয়।
  • নর, নারীর প্রতি পরস্পর পবিত্র দৃষ্টি রাখব।
  • জগতে সৎপ্রবৃত্তির পুণ্য প্রসারের জন্য নিজের সময়, প্রভাব, জ্ঞান, পুরুষার্থ এবং সম্পদের এক অংশ নিয়মিত রূপে নিয়োজিত করে যাব।
  • পরম্পরার তুলনায় বিবেককে মহত্ত্ব দেব।
  • সজ্জনদের সংগঠিত করতে, অনীতির বিরুদ্ধে প্রতি বাদে এবংনব সৃজনের গতিবিধিতে পূর্ণ রুচি রাখব।
  • রাষ্ট্রের একতা এবং সমতার প্রতি নিষ্ঠাবান থাকব। জাতি, লিঙ্গ, ভাষা, প্রান্ত, সম্প্রদায় ইত্যাদির কারণে পরস্পর কোন ভেদাভেদ রাখব না।
  • মানুষ নিজেই নিজের ভাগ্য বিধাতা, এই বিশ্বাসের ভিত্তিতে আমাদের স্বীকৃতি হল যে আমরা উৎকৃষ্ট হব এবং অপরকে শ্রেষ্ঠ করে তুলব, তবেই নিশ্চিত রূপে যুগ বদলাবে।
  • আমি বদলালে যুগ বদলাবে, আমি শোধরালে যুগ শোধরাবে ‘ এই তথ্যের প্রতি আমাদের পরিপূর্ণ বিশ্বাস আছে।