Jibane Sukhi Hoyar Upay জীবনে সুখী হওয়ার সেরা ১০টি উপায়

প্রত্যেকেই চায় জীবনে সুখী হতে, আর সুখী থাকার জন্য মানুষ নানান উপায় অবলম্বন করে থাকে, তবে প্রকৃত ভবে তখনি সুখ ও খুশি আনা সম্ভব যখন নিজেক সঠিক সংকল্প ও নিয়মের মধ্যে দিয়ে চালনা করা যাবে,

Jibane Sukhi Hoyar 10 Ti Upay

কিছু ছোট ছোট নিয়ন জীবনে অনেক বড়ো বড়ো পরিবর্তন আনতে পারে, যে মানুষের জীবনে কোনো নিয়ম বিধি নেই তার জীবন বিভ্রান্তিতে ভরা থেকে যায়, এরকম মানুষেরা বুঝে উঠতে পারেনা কখন কোন সময় কি করা উচিত আর কি করা অনুচিৎ,

Jibone Sukhi Howar Upay

একমাত্র নিয়িমই পারে জীবনকে সঠিক দিশা দিতে, আর কোনো নিয়ম নীতি না থাকলে জীবনের অবস্থা বেশিরভাগ ক্ষেত্রে খারাপের দিকে ধাবিত হতে থাকে,

নিয়ম বিধি ও ধারা জীবনকে কোনো বিধিনিষেধের মধ্যে বেঁধে রাখার জন্য হয় না বরং জীবনকে সঠিক পথে চালনা করার জন্য হয়, কখনো কোনো সমস্যার মধ্যে পড়তে না হয়, ও জীবন যাতে সুখ ও অনন্দের বাতাবরণের মধ্যে দিয়ে অতিবাহিত হয় তার জন্য জীবনে নিয়মের খুব দরকার,

নিজের জীবনকে সুখী করে তোলার জন্য 10 টি সহজ উপায়, নিয়ম ও বিধি এর কথা মনে এখানে বলা হলো, যে গুলো অনুসরণ করে জীবনকে সুন্দর করে সাজিয়ে তোলা সম্ভব হবে,

1. অতীতের সাথে শান্তি স্থাপন

অনেক সময় এমন কিছু ঘটনা আমাদের জীবনে ঘটে যেগুলো মনে দাগ কেটে যায়, যে ঘটনা গুলো কোনোদিন জীবন আশা করেনি সেগুলোই যদি ঘটে মনে তার খারাপ প্রভাব পড়ে, যা সহজে ভুলে যাওয়া সম্ভব হয় না,
এরকম অতীতে ঘটে যাওয়া সমস্যাকে বর্তমানে টেনে আনা মানে নিজেকে অনেক পিছিয়ে নিয়ে যাওয়া, আর মূল্যবান সময়কে নষ্ট করা, তাই এরকম ঘটনা থেকে নিজেকে সম্পূর্ণ রূপে মুক্ত করতে হবে,

কখনোই অতীতের সমস্যাকে বর্তমানের সঙ্গে মিশিয়ে ফেলা যাবেনা, যেটা করতে হবে তা হলো অতীতের থেকে শিক্ষা নিয়ে নিজেকে ও জীবনকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে, যে মানুষ শুধু অতীত নিয়ে ভাবতে থাকে তার জীবনে সুখ অধরাই রয়ে যায়, আর তার বর্তমান সময়কে ও তার সাথে ধীরে ধীরে ভবিষ্যতকে নষ্ট করে ফেলে,

2. অন্যের ভাবনাকে বেশি প্রাধান্য না দেয়া

একটি কথা আছে “সব চেয়ে বড়ো রোগ, কি বলবে লোক” আমাদের মন বেশিরভাগ সময়েই অন্যের ভাবনাকে নিয়ে বেশি ভাবতে থাকে, কে কি ভাবলো বা কে কি বলবে, এসব কথা ভেবে অনেক ভালো কাজকে আমরা করে উঠতে পারিনা, আবার অনেক কাজ করার সময়েও বিভিন্ন জনের নানান নেতিবাচক কথা বার্তা শুনে কাজটা আর সম্পন্ন করা হয়ে ওঠে না,

যদি মনে হয় যে কাজটি আপনি করছেন সেটা কোনো ভুল নয় ও আপনার জীবনের জন্য এটি একটি  ভালো দিক তাহলে অপরের কোনো কথায় না গিয়ে সেই কাজটি করে ফেলুন. এতে জীবনে সাফল্য আসবে আর তার সাথে সাথে নিজের মধ্যে আত্মবিশ্বাসেরও বিস্তার ঘটবে,

3. সময় সব কিছু নিরাময় করে

যতোই সমস্যা বেদনা দুঃখ আসুক কখনো হাল ছারা উচিৎ নয়, শক্ত হাতে হাল ধরে রেখে জীবনের নৌকা বেয়ে চলতে হবে, আর এভাবেই একদিন নিজের লক্ষ্যে ও গ্রন্তব্যে পৌঁছানো সম্ভব হবে,

সময় একদিন সব বেদনা ও দুঃখ গুলোকে ভুলিয়ে দেয়, শুধু সময় কে সময় দিতে হবে, যেটা আমরা করতে পারিনা সেটা সময় করে দেখায়, শুধু নিজেকে ঠিক ভুলের পথটি বেছে নিতে হবে,

কোনো সমস্যা থেকে পালিয়ে বেরালে সমস্যা আরও বেড়ে যায়, তাই যখন কোনো সমস্যা আসবে সেই সমস্যার সম্মুখীন হতে হবে, জীবনের সমস্যা গুলোও আমাদের অনেক কিছু শিক্ষা দেয়, জীবনকে নতুন করে গড়ে নেবার আরেকটা সুযোগ দেয়,

4. অন্যের সাথে নিজের তুলনা না করা

বেশিরভাগ ক্ষেত্রে আমরা নিজেকে অপরের সাথে মেলানোর চেষ্টা করি, নিজের সব কিছুর সাথে অন্যের তুলনা করি, আর এর কারণে আমরা নিজেকে অনেক দুঃখী করে তুলি নিজের অজান্তেই,

নিজেকে সুখী রাখতে হলে কখনোই অপরের সাথে নিজের তুলনা করা উচিত নয়, যেটুকু নিজের আছে সেটা অনেক, আর এটা নিয়েই এগিয়ে চলতে শিখতে হবে,

এই পৃথিবীর প্রতিটা মানুষ অনন্য, প্রত্যেকের মধ্যেই কিছু নিজস্ব প্রতিভা সুপ্ত অবস্থায় থাকে, শুধু সেই প্রতিভাকে জাগিয়ে তুলতে শিখতে হবে,

5. বেশি চিন্তা না করা

কোনো বিষয় নিয়ে কখনো বেশি চিন্তা করা ঠিক নয়, কারণ একটি বিষয় নিয়ে অনেক বেশি চিন্তা করার ফলে জীবনের লক্ষ্য ওই একটি বিষয়ের কেবল প্রতিই আবদ্ধ হয়ে পরে, এতে জীবনের লক্ষ্য ও এনার্জি দুটোই হারাতে থাকে,

যার প্রতিক্রিয়া ফ্যামিলির উপর, নিজের উপর পড়ে, ও নিজেকে অনেক বেশি একা অনুভব হতে থাকে, কারণ চিন্তা কেবল একটি বিষয় নিয়ে, এতে করে জীবন ও যে পিছিয়ে পড়ছে সেদিকেও খেয়াল থাকে না,

জীবনে সুখী হতে হলে নিজের প্রতি, নিজের পরিবারের প্রতি, ও নিজের কেরিয়ারির প্রতি নজর রাখতে হবে, কারণ জীবনের সফলতা ও সুখ চিন্তা ভাবনার ব্যালেন্সের উপর নির্ভর করে,

6. সুখ খুঁজতে জানতে হবে

একটি কথা বুঝতে হবে আপনার সুখ দুঃখের কারণ কেউ অপর জন নয়, আপনি নিজেই। যতক্ষণ নিজের সুখ দুঃখের কারণ অন্য কেউ ততক্ষণ আপনি জীবনে কোনো কিছুই পরিবর্তন করতে পারবে না,

যখন দ্বিতীয় জন আপনাকে খুশি দেবে ততক্ষণ আপনি খুশি থাকবেন, আর সে যখন ইচ্ছা সেই সুখ কেরে নিতে পরে, আর আপনি তখনই অসুখী হয়ে পড়বেন, ধীরে ধীরে আপনি কখন দ্বিতীয় জনের বসবর্তি হয়ে পড়বেন বুঝতেই পারবেন না, আর এটা একটা সুখী জীবনের জন্য কখনোই কাম্য নয়,

নিজের দুঃখ নিজের সুখ সব কিছুই নিজেকে কন্ট্রোল করতে হবে, কোনো অপর ব্যাক্তির প্রতি নির্ভশীল হওয়া কখনোই উচিৎ নয়, যদি নিজে নিজে খুশি করার শক্তি থাকে তাহলে পৃথিবীর কোনো দুঃখই আপনাকে স্পর্শ করতে পারবে না,

7. রোজকার, সঞ্চয় এবং বিনিয়োগ,

জীবনে উন্নতি সাধন করতে হলে আয়, ব্যয় ও সঞ্চয় এর উপর সঠিক ভারসাম্য জানতে হবে, খরচ করতে হলে রোজকার করতে হবে, আর তার সাথে সাথে সঞ্চয় করতে করতে হবে, যদি এগুলো সঠিক ভাবে না করা যায় তবে আপনি আর্থিক সমস্যার সম্মুখীন হতে পারেন,

আর আর্থিক সমস্যা একবার জীবনের প্রধান কারণ হয়ে দাড়ালে, বিভিন্ন সমস্যা জীবনকে ঘিরে ধরবে, যা একজন মানুষের দুঃখের কারণ,

8. সঠিক মানুষ নির্ধারণ

চলার পথে সব মানুষ যে ভালো মানুষ হবে এমন কোনো কথা নেই আবার সব সম্পর্ক যে মধুর হবে তারও কোনো নিশ্চয়তা নেই, তাই জীবনে সুখী হতে এরকম মানুষ ও সম্পর্ক থেকে নিজেকে দূরে সরিয়ে রাখাই শ্রেও,

কিছু মানুষ আছে যারা সামনে ভালো ব্যবহার করে আর পিঠ পিছে আপনার ক্ষতি কামনা করে এরকম ব্যাক্তিত্বের সাথে প্রায়শই আমাদের পরিচয় ও সম্পর্ক গঠন হয়ে থাকে, তাই এসব ক্ষেত্রে নিজের ভালো মনের বিচার নিজেকেই করতে হবে,

9. নিজের লক্ষ্য স্থির করুন,

আপনি যেটা চাইছেন সেটা নিয়ে সেটা পাওয়ার জন্য যদি সঠিক চেষ্টা ও প্রকল্প না করেন তাহলে তা কোনো দিনই আপনার পাওয়া হবে না, তাই নিজের লক্ষ্যকে স্থির করুন, নিজেকে সেই জিনিসের প্রতি অভিজ্ঞ করে তুলন,

জীবনে অনেক কিছুই হারিয়ে যায়, আর হারিয়ে যাওয়া মানেই সব শেষ নয়, শেষ থেকেও শুরু করা যায়, আর শেষ থেকে শুরুর মনে অভিজ্ঞতা অর্জন করে শুরু করা, আমরা জানি পৃথিবীতে সব বিখ্যাত ও সফল ব্যাক্তি হারের মধ্যে দিয়েই জয় অর্জন করেছেন, কেউই একেবারে সফল হয়নি,

10. অভ্যাস

মানুষের অভ্যাস বলে দেয় তার ভবিষ্যত জীবন কেমন হবে, সব থেকে বড় দুটি অভ্যাস হলো খাওয়া এবং ঘুমানো, যে ব্যাক্তি এই দুটি সাধারণ অভ্যাস পালন করে চলে না, সে কখনোই সফল হতে পারবে না,

যে মানুষ নিয়ম মেনে খাওয়া, দাওয়া, শোয়ার অভ্যাস করেনা, সে সময় অসময়ে অসুস্থ হয়ে পড়ে ও মনে মনে দুঃখী হয়ে পরে, তাই জীবনে এমন অভ্যাস গড়ে তোলা উচিৎ নয় যা নিজেকে পিছনের দিকে নিয়ে যায়, নিজের মধ্যে এমন অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে যা জীবনকে সামনের দিকে ধাবিত করে,

যদি আপনি এই দশটি নিয়ম মেনে চলা যায় তবে একটি সুখী জীবন পাওয়া অসম্ভব কিছু নয়, আর নিজের লক্ষ্যে পৌঁছানর পথটিও অনেক সহজ সরল হবে,